Skip to main content

হাজার বছর আগের ত্রিকোণমিতি

চিত্রঃ হাজার বছর পুরনো ত্রিকোণমিতির ছক।

হাজার বছর আগের ত্রিকোণমিতি

প্রাচীন ব্যবিলনীয় একটি পোড়ামাটির তৈরি ফলককে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে যথাযথ ত্রিকোনমিতির ছক বলে সনাক্ত করা হয়েছে। এ থেকে ধারনা করা যাচ্ছে গণিতের দিক থেকে ব্যবিলনীয়রা গ্রীকদের তুলনায় ১০০০ বছর আগেই ত্রিকোনমিতি আবিষ্কার করেছে। ইতিপূর্বে মনে করা হতো গ্রীকরাই ত্রিকোনমিতির উদ্ভাবক।

প্লিমটন ৩২২ নামের এই ফলকটি ১৯০০ সালের শুরুর দিকে বর্তমান দক্ষিন ইরাক হতে আবিষ্কৃত হয় তবে গবেষকগণ এতদিন এর পাঠোদ্ধার করতে পারেন নি। তবে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের একদল গবেষকের সহায়তায় সম্প্রতি এর রহস্য উন্মোচিত হয়।

গবেষকদের একজন ড্যানিয়েল ম্যানসফিল্ড বলেন, “আমাদের গবেষণায় উদ্ঘটিত হয় প্লিমটন ৩২২ এ সমকোনী ত্রিভুজের বর্ণনা রয়েছে। এবং অনুপাতভিত্তিক এক অভিনব ত্রিকোনমিতির মাধ্যমে এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যা কোণীয় এবং বৃত্তীয় ব্যাখ্যা হতে ভিন্ন। নিঃসন্দেহে এটি হতবিহ্বলকারী এবং সন্দেহাতীয় গাণিতিক মেধার প্রকাশ।”

গবেষকগণ ইতিপূর্বেই দেখতে পেয়েছেন এই ফলকে বেশ কিছু পীথাগোরিয়ান ত্রয়ীর সমাবেশ রয়েছে। পিথাগোরীয়ান ত্রয়ীর মাধ্যমে একটি সমকোনীয় ত্রিভুজের তিনবাহুর মধ্যে সম্পর্ক সূচিত করা হয়। এতদিন প্লিমটন ৩২২ ফলকে এই পীথাগোরিয়ান ত্রয়ীর অন্তর্ভুক্তিকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে বিতর্ক ও রহস্য ছিলো। ব্যবিলনীয় গণিত এখনকার মতো ১০ ভিত্তিক ছিলো না বরং ছিলো ৬০ ভিত্তিক।

ব্যবীলনীয় গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে দেখা যায় ফলকটিকে প্রাথমিকভাবে ৬ টি কলাম ও ৩৮ টি সারি বিদ্যমান ছিলো। গবেষকগণ মনে করেন এই ছক ব্যবহার করে প্রাচীন পন্ডিতেরা প্রাসাদ, মন্দির, খাল প্রভৃতির হিসেব করতেন।

যদি বর্তমান গবেষণা ঠিক হয় তাহলে ১২০ খ্রীষ্ট পুর্বাব্দ জন্ম নেওয়া গ্রীক পন্ডিত হিপার্কাসকে আর ত্রিকোনমিতির জনক অভিদায় ভুষিত করা যাবে না। গবেষকগণ বর্তমান ফলকটির বয়স নির্ণয় করে দেখেছেন এটি ১৮২২ থেকে ১৭৬২ খ্রীষ্ট পুর্বাব্দে তৈরি করা। তাছাড়া এটি শুধু সবচেয়ে প্রাচীনই নয়, এটি ইতিপূর্বে প্রাপ্ত সবচেয়ে প্রাচীন ত্রিকোনোমিতিক নিদর্শনের চেয়ে অনেক বেশী নির্ভুল।


#সংগৃহীত।

Comments

  1. অনেক কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

মনের ভাষা গণিত

চিত্রঃ set theory মনের ভাষা গণিত গণিত মানেই কি কেবল ভারী চশমা পরা গুরুগম্ভীর মানুষের জটিল হিসাব নিকাশের বিষয়? নাকি এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে শিল্পকলারও? প্রথম বিবেচনায় মনে হতে পারে গণিত এবং শিল্পকলা দুইটা দুই মেরুর বিষয়। গণিতের কাজ হিসাব, যুক্তি আর প্রমাণ নিয়ে যেখানে শিল্পকলা হলো আবেগ, অনুভূতি, সৃজনশীলতা আর নান্দনিকতার বাহার। কিন্তু এই দুটো বিষয়ের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আমাদের অনুমানের থেকেও গভীর। গান শুনতে কিংবা ছবি আঁকতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। কিন্তু সেই তুলনায় গণিত পছন্দ করে এরকম মানুষ আবার হাতে গোনা। বরং বেশিরভাগ মানুষই গণিত থেকে যথা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখতে পারলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। তাহলে কিভাবে গণিতের মতো (বেশিরভাগ মানুষের কাছে) অপ্রিয় আর ভীতিকর একটি বিষয় শিল্পকলার মতো সর্বজনগ্রাহ্য এবং সর্বজনবিদিত কোনো কিছুর সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে? একটু গভীরে তাকালেই আমরা এ দুটো বিষয়ের মধ্যে সূক্ষ সম্পর্কটা ধরতে পারবো। মহাবিশ্বের সবকিছু ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে সুন্দর ভাষা হলো হলো গণিত। আর শিল্পকলা যদি হয় প্রকৃতি আর আমাদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করার সবচেয়ে সৃজ...